অনিয়মিত পিরিয়ড একটি প্রচলিত সমস্যা। অনিয়মিত পিরিয়ডের যে কোনো নারীর, যৌবনের শুরুতে অথবা যৌবন শেষে হতে পারে। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন ধরণের শারীরিক জটিলতার কারণে ও অনিমিত মাসিক হতে পারে।  

অনিয়মিত পিরিয়ড | জেনে নিন কারণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে

অনিয়মিত পিরিয়ডের কারণ ও চিকিৎসা
অনিয়মিত পিরিয়ডের কারণ ও চিকিৎসা


অনিয়মিত পিরিয়ড - 

১২-১৩ বছর বয়স থেকে ৪৫-৫০ বছর অবধি একজন নারীর প্রজননকাল। অর্থাৎ সন্তান ধারনের জন্য তাঁর শরীরে এই সময়ে প্রতি মাসে ডিম্বাণু তৈরি হয়। শুক্রাণুর সংস্পর্শে সেই ডিম্বাণু নিষিক্ত না হলে সেটা মাসিক রক্তস্রাবের মাধ্যমে নারীর শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। এই মাসিক চক্র বা পিরিয়ড সাইকেল হিসাব করা হয় এক চক্রের শুরুর দিন থেকে পরবর্তি চক্রের প্রথম দিন পর্যন্ত। কিন্তু নানা কারণে এই নিয়মে ছন্দপতন ঘটতে পারে বা অনেক সময় মাসের পর মাস পুরোপুরি মাসিক বন্ধ থাকতে পারে। রেগুলার পিরিয়ড সাইকেল এর গড় সময় ২৮ দিন ধরা হয়। নারীর শরীর ভেদে, আবহাওয়া কিংবা মাসের ভিত্তিতেও এটি পরিবর্তন হতে পারে। তবে সাধারণত ২৪-৩৮ দিনের সাইকেল হলেও তাকে রেগুলার পিরিয়ড হিসেবে ধরা হয়। এর কম বা বেশি হলে বা সাইকেল বার বার পরিবর্তন হলে তাকে ইরেগ্যুলার পিরিয়ড বলা হয়। নারী শরীরে অনিয়মিত বা ইরেগ্যুলার পিরিয়ড একটি প্রচলিত সমস্যা। আসুন জেনে নেই অনিয়মিত পিরিয়ড কেন হয় তাঁর কিছু কারণ।

অনিয়মিত পিরিয়ড হওয়ার কারণসমূহ:

১) বয়ঃসন্ধিকাল:

বয়ঃসন্ধিকাল অনিয়মিত পিরিয়ড হওয়ার কারণ - 

বয়ঃসন্ধির শুরুতে সাধারণত ১২-২০ বছর বয়সে অনেকের শরীরে ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্ট্রেরন হরমোনের অভাব থাকে তবে পিরিয়ড অনিয়মিত হতে পারে। এছারাও জন্মগত ত্রুটির কারণেও পিরিয়ড অনিয়মিত হতে পারে।

২) জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল:

জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল অনিয়মিত পিরিয়ড হওয়ার কারণ - 

বিবাহিত নারীরা হঠাৎ জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল বন্ধ করে দিলে বা বার বার ওষুধ পরিবর্তন করলে পিরিয়ড অনিয়মিত হতে পারে।

৩) পিসিওএস বা পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম:

পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম অনিয়মিত পিরিয়ড হওয়ার কারণ - 

এটি একটি পরিচিত হরমোনের সমস্যা যা শতকরা ৮-১০ জন নারীরই আছে। এর ফলে প্রতি মাসে ওভারি থেকে ডিম্বাণু নির্গমন হয় না। এই ডিম্বাণুগুলো ওভারিতে সিস্ট তৈরি করে ওভারির চারপাশে জমা হয় এবং শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়। হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে মাসিক সময় মত হয় না। কখনো কখনো বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

) মানসিক চাপ বা স্ট্রেস: 

অনিয়মিত পিরিয়ড হওয়ার কারণ মানসিক চাপ, মস্তিস্কে রয়েছে হাইপোথ্যালামাস নামের একটি বিশেষ অংশ, যেখান থেকে প্রতিনিয়ত নিঃসরিত হয় নানা ধরনের হরমোন। এর মধ্যে কিছু হরমোন রয়েছে, যা নারীদেহে মাসিকের জন্য প্রভাবকের কাজ করে।

৫) শরীরের এর ওজন বেড়ে গেলে অনিমিত মাসিক হতে পারে। 

৬) যে সকল নারীরা শিশুদের বুকের দুধ খাওয়ান, তাদের অনিমিত মাসিক হতে পারে। 


চিকিৎসা: 

ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী হরমোনাল থেরাপি দেওয়া হয়। রক্তপাত বেশি হলে আয়রন সাপ্লিমেন্ট দেওয়া হয়। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে। 

কখন ডাক্তারের কাছে যাবো:

  • বছরে তিন বার এর বেশি পিরিয়ড না হওয়ার। 
  • পিরিয়ড ২১ দিনের আগে এবং ৩৫ দিনের পরে হয়।
  • পিরিয়ড এর সময় ওদিক রক্তপাত হওয়া। 
  • পিরিয়ড এর সময় অতিরিক্ত ব্যথা অনুভব হলে। 

আমাদের সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন